আবার ভূমিকম্প, এবার উৎপত্তিস্থল বাংলাদেশের মধ্যেই

 

সাত দিনের মাথায় দেশে আবার ভূমিকম্প অনুভূত হলো আজ রোববার দুপুর সোয়া ১২টার পর। আজ ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে সিলেট অঞ্চলে। সিলেটের ছাতকেই এ ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল। রিখটার স্কেলে এর মাত্রা ছিল ৪। এর আগে ১৪ সেপ্টেম্বর রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ভূমিকম্প অনুভূত হয়। এর উৎপত্তিস্থল অবশ্য ছিল ভারতের আসাম রাজ্যে। এর মাত্রা ছিল ৫ দশমিক ৯।



বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের ভূমিকম্প পর্যবেক্ষণ ও গবেষণাকেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. রুবাইয়াত কবীর আজ প্রথম আলোকে বলেন, ‘আজ ৪ মাত্রার ভূমিকম্প হয়েছে বলে আমাদের কাছে রেকর্ড আছে। এটি স্বল্পমাত্রার ভূমিকম্প। কিন্তু আজকের ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল সিলেটের ছাতক।’

আজ দুপুর ১২টা ১৯ মিনিটে এ ভূমিকম্প অনুভূত হয়। ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল রাজধানী ঢাকা থেকে ১৮৫ কিলোমিটার উত্তর–পূর্বে বলে আবহাওয়া অধিদপ্তরের বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।


১৪ সেপ্টেম্বরের ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল ভারতের আসামের রাজধানী গুয়াহাটি থেকে দূরে আসাম ভ্যালি ও হিমালয়ের মাঝামাঝি। এটি মাঝারি থেকে ভারী মাত্রার ভূমিকম্প ছিল।


ভূমিকম্পবিশেষজ্ঞ অধ্যাপক সৈয়দ হুমায়ুন আখতার প্রথম আলোকে বলেন, আজ যেখানে ভূমিকম্পের উৎপত্তি হয়েছে, সেটি ডাউকি ফল্ট (ডাউকি চ্যুতি) অঞ্চলে। বাংলাদেশের ভূমিকম্পের দুটি উৎস আছে। একটি উত্তরের দিকে, আরেকটি পূর্ব দিকে। উত্তরের দিকটি হলো ডাউকি ফল্ট। এটি বাংলাদেশের জন্য খুব ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা। তাই আজ স্বল্পমাত্রার ভূমিকম্প হলেও এটি একটি সতর্কসংকেত দিচ্ছে। 


অধ্যাপক সৈয়দ হুমায়ুন আখতার আরও বলেন, আজ যেখানে ভূমিকম্প উৎপত্তি হয়েছে, সেখানে ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে দু–তিনটি ৪ বা এর চেয়ে কিছু বেশি মাত্রার ভূমিকম্প হয়। এলাকাটি ক্রমেই ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে যাচ্ছে।

এই ডাউকি ফল্টে ১৭৮৭ সালের ভূমিকম্পে ব্রহ্মপুত্রের গতিপথ পরিবর্তন হয়ে যায়। আবার এর ১১০ বছর পর ১৮৯৭ সালে ‘গ্রেট ইন্ডিয়া আর্থকোয়েক’ নামে পরিচিতি ভূমিকম্পও এখানে হয়। এর ফলে শুধু আসাম ও মেঘালয় নয়, ঢাকা শহরও ক্ষতিগ্রস্ত হয় বলে জানান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ব বিভাগের সাবেক অধ্যাপক হুমায়ুন আখতার। তিনি বলেন রিখটার স্কেলে তখন ওই ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৮ দশমিক ২। ভূমিকম্পে তখন ঢাকায় পাঁচজন নিহত হন। সে সময় ঢাকায় থাকা ইংরেজ কর্মকর্তারা এখনকার রমনায় তাঁবু করে থাকতেন ভূমিকম্পের পরের কয়েক মাস। কেউ কেউ বুড়িগঙ্গায় বজরায় থাকতেন বলেও ঐতিহাসিক তথ্য ঘেঁটে জানা যায়।

Countdown Timer
00:01

Post a Comment

Previous Post Next Post